হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আর্থার অ্যাগাস্টনের হাতে তৈরি এই কন্টিনেন্টাল ডায়েট যদি খেতে পারেন, পেট–কোমরের মেদ কমবে দ্রুত, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা থাকবে কমের দিকে, ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বা প্রকোপ কমবে৷ কমবে হৃদরোগের আশঙ্কা৷ তবে ভারতীয় তথা বাঙালি খাবার ছাড়া মুখে না রুচলে খাবারের একটু এদিক ওদিক করে নিতে হতে পারে৷
কী আছে ডায়েটে :
আছে ভাল কার্বোহাইড্রেট–ফ্যাট ও লিন প্রোটিন৷ কোনটা কীভাবে খাবেন দেখে নিন৷
• ভাল কার্বোহাইড্রেটের গ্লাইসিমিক ইনডেক্স কম থাকে৷ অর্থাৎ খেলে রক্তে সুগার ধীরে ধীরে বাড়ে ও পেট বেশিক্ষণ ভরা থাকে৷ কমে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের আশঙ্কা৷ কাজেই সাদা ভাত, ময়দা, সাধারণ পাস্তা–নুডলস, মিষ্টি, ফলের রসের বদলে খান শাক–সবজি–ফল, আটার রুটি, ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেইন ব্রেড–পাস্তা–নুডলস, প্রাকৃতিক ওটস৷
ট্রান্স ফ্যাট বারণ৷ ফলে মার্জারিন, বনস্পতির সঙ্গে বাদ যাবে প্রসেসড খাবার, যেমন, হাফ–কুকড ফুড, কেক, পেস্ট্রি, চিকেন নাগেট, প্যাটিস, বেকন, সসেজ, এমনকী বেশ কিছু বিস্কুটও৷
• অল্প করে ভাল ফ্যাট খান৷ যেমন, এক টেবিল চামচ বাদাম/বীজ, অলিভ–ক্যানোলা–ফ্ল্যাক্স্ বা ওয়ালনাট অয়েল, এক এক দিন এক একটা বা মিলিয়ে–মিশিয়ে৷ সারা দিনে ৩ চা–চামচের বেশি নয়৷ ঘি–মাখন স্যাচুরেটেড ফ্যাটে ভরপুর৷ অতএব তাতে নিষেধাজ্ঞা৷
• আমিষ প্রোটিনে আছে উপকারী ও অপকারী দু–রকম চর্বিই৷ অপকারী চর্বি ছেঁটে ফেলে স্বাস্থ্যকর লিন প্রোটিন, যেমন, মাছ, বিফ–পর্ক–চিকেনের কিছু অংশ, ডিমের সাদা খান৷ নিরামিষ প্রোটিনে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে৷ কাজেই সয়াবিন, বিন–ডাল–ছোলা–রাজ, ডাব্লড টোনড দুধ ও এই দুধে বানানো খাবার খান৷ ক্যালোরি বেশি বলে তৈলাক্ত মাছ–মাংস, ডিমের কুসুম, হোল মিল্ক ও এই দুধের চিজ, দই, ছানা, আইসক্রিম, দুধের সর ব্রাত্য এই ডায়েটে৷
• জিরে, ধনে, লংকা, গোলমরিচ, গরম মশলা, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, সর্ষে, ভিনিগার, সোয়া বা চিলি সস, রেগুলার মেয়োনিজ ব্যবহার করুন৷ চিনি, ঘি, মাখন বাদ৷
• খাওয়ার পর মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে এক টুকরো ডার্ক চকোলেট বা মাঝেমধ্যে মাখনতোলা দুধ ও সুগার–ফ্রি দিয়ে বানানো পুডিং বা পায়েস এক চামচ খেতে পারেন৷ ময়দা, ঘি, মাখন, চিনি দিয়ে বানানো কিছু চলবে না৷ লো–ফ্যাট দুধের সঙ্গে অল্প কলা বা আম মিশিয়ে স্মুদি বানিয়ে খান৷ দু–এক টুকরো কালোজাম, স্ট্রবেরি, আপেল, আনারস, পেপে দিয়ে বানানো স্যালাড বা কাস্টার্ড খেতে পারেন৷ ফলের রস বা শুকনো ফল চলবে না৷
• মিষ্টি পানীয় নয়, জিরো ক্যালোরি হলেও নয়৷ চিনি ছাড়া কফি দিনে এক–আধ কাপ বড়জোর ৷ ডাবল টোনড দুধ মিশিয়ে নিলে ক্ষতি নেই৷
ডায়েটিং ও ব্যায়াম , ধাপে ধাপে:
ডায়েট শুরু করার আগে মন্দ কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে শরীরকে তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া হয়৷ তারপর শুরু হয় আসল ডায়েট৷
• ধাপ ১ : দু–সপ্তাহ থেকে দু–মাসের মতো সময় নিয়ে স্টার্চি খাবার, যেমন, ভাত, রুটি, নুডলস, পাস্তা, চিড়ে, মুড়ি, খই আলু, রাঙা আলু, বিট, ভুট্টা, স্কোয়াশ, ফল একটু একটু করে কমিয়ে, এক সময় বন্ধ করা হয়৷ বারণ হয় মিষ্টি, ভাজা, ফলের রস, মদ৷ খেতে হয় কম চর্বির মাছ, চামড়া ছাড়ানো দেশি মুরগির মাংস, রেডমিটের যে অংশে চর্বি কম থাকে সে রকম মাংস, সয়াবিন ও সয়াবিনজাত দুধ–দই, ডাবলড টোনড দুধ ও এই দুধের দই–ছানা, অ্যাভোক্যাডো, বাদাম, বীজ, সব রকম শাক, কম ক্যালোরির সবজি ইত্যাদি৷
• ধাপ ২ : প্রতি সপ্তাহে একটি করে ভাল কার্বোহাইড্রেট অল্প করে দেওয়া হয়৷ প্রথম সপ্তাহে ফাইবারযুক্ত কম মিষ্টি ফল দিলে দ্বিতীয় সপ্তাহে দেওয়া হয় লো–গ্লাইসিমিক ইনডেক্সের একটা সিরিয়াল, তৃতীয় সপ্তাহে আটার রুটি, ব্রাউন ব্রেড বা ভাতের মধ্যে একটা, চতুর্থ সপ্তাহ আরেকটি ফল, পঞ্চম সপ্তাহে সিরিয়াল৷ দুপুরে ও রাত্রে কম করে দু–কাপ সবজি, প্রোটিন ও সারা দিনে দুধের দু–তিনটে পদ খেতে হয়৷ মোটামুটি ৬ সপ্তাহ চলে এই ধাপ৷
আর্থারের মতে ফল খান দুপুরে বা রাতে খাওয়ার পর৷ সকালে খেলে আরও বেশি খাওয়ার ইচ্ছে হতে পারে৷ সকালে প্রাকৃতিক ওটস খেলে সঙ্গে একটা প্রোটিন খান৷
ষষ্ঠ সপ্তাহের শুরুতে এসে দিনে তিনটে ফল ও তিন রকম সিরিয়াল খেতে হয়৷ ইচ্ছে হলে একটি সিরিয়ালের বদলে ফাইবারসমৃদ্ধ শাক–সবজি খেতে পারেন৷
• ধাপ ৩ : ধাপ ২–এর ষষ্ঠতম সপ্তাহের মতো খাবার খেয়ে যেতে হয়৷ দিনে ২০০০ ক্যালোরির মতো৷ তার মধ্যে কার্বোহাইড্রেট ২৮ শতাংশ, অর্থাৎ ১৪০ গ্রাম৷ সাধারন সুষম ডায়েটে যেখানে ৪৫–৬৫ শতাংশ বা ২২৫–৩২৫ গ্রাম খাওয়া হয়৷ ফাইবারযুক্ত শাক–সবজি–ফল থাকে পর্যাপ্ত৷ মন্দ ফ্যাট ঝেড়ে ফেলে প্লেট সাজাতে হয় ভাল ফ্যাট ও লিন প্রোটিনে৷
মাঝেমধ্যে এক–আধ দিন ভুলভাল খেয়ে নিলেও সমস্যা নেই৷ কারণ এত সব নিয়ম মেনে চলতে চলতে পেট ছোট হয়ে যায়৷ ফলে খুব বেশি খাওয়া সম্ভব হয় না৷
• সপ্তাহে ৫–৬ দিন ৩০–৪৫ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করতে হয়৷ জোর কদমে হাঁটা জগিং, সাঁতার, সাইক্লিং–এর সঙ্গে হালকা ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে ক্যালোরি ঝড়ার পাশপাশি বিপাক ক্রিয়ার হার বাড়ে বলে চট করে চর্বি জমতে পারে না৷ যোগা–প্রাণায়ামও অল্পস্বল্প করা দরকার৷
পরিসংখ্যান বলছে সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে ১২টি বিমান দুর্ঘটনায় মোট ২২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরো পড়ুন
ছোট-বড় সকলের জন্যই গরুর দুধ বেশ উপকারী খাবার। আরো পড়ুন
টিফিন নিয়ে খুদেদের বায়নার শেষ নেই! টিফিনে ভালমন্দ খাবার না থাকলেই সেই খাবার আবার ফিরে আসে বাড়িতে। আরো পড়ুন
দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই এসে গেল কালীপুজো। আরো পড়ুন
অতিরিক্ত মেদ কিংবা ডায়াবিটিস থেকে মুক্তির সহজ সমাধান হিসাবে অনেকেই সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করেন। আরো পড়ুন
আলু খেতে ভালবাসেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। আরো পড়ুন
পুজো মানেই ভূরিভোজ। জমিয়ে খাওয়াদাওয়া। আরো পড়ুন
চিংড়ি মাছ খেতে ভালবাসেন না এমন বাঙালি হাতে গোনা। আরো পড়ুন
চতুর্থী তিথির অধিষ্ঠাতা দেবতা বা অধিদেবতা গৌরীপুত্র সিদ্ধিদাতা গণেশ। আরো পড়ুন
ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা সকলেরই জানা। আরো পড়ুন