ইস্তফা দিলেন সব্যসাচী দত্ত। বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করলেন তিনি। অসৎ ব্যবসায়ী এবং স্বার্থান্বেষীদের কাজে তিনি বাধা দিচ্ছিলেন এবং রাজারহাট এলাকায় জলা ভরাট-সহ নানা অসাধু কাজে বাধা দিচ্ছিলেন, কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য তিনি পাননি— অভিযোগ সব্যসাচীর। নির্বাচিত পুরপ্রতিনিধি তথা মেয়র হিসেবে পুর আইনকে যখন রক্ষা করতে পারছেন না, তখন মেয়র পদে থেকে কোনও লাভ নেই— এই কথা বলে বৃহস্পতিবার ইস্তফা ঘোষণা করলেন সব্যসাচী।
গতকাল অর্থাৎ বুধবারই সব্যসাচী দত্তকে সাময়িক স্বস্তি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তাঁর বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিধাননগরের পুর কমিশনার যে বৈঠক ডেকেছিলেন, সেই বৈঠকের নোটিসকে বুধবার খারিজ করে দেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। নোটিসের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সব্যসাচী দত্তই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। হাইকোর্ট জানায় নোটিস অবৈধ।
তবে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আর আনা যাবে না, এমন কোনও পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। হাইকোর্ট বরং বিধাননগর পুর নিগমের চেয়ারপার্সনকে নির্দেশ দিয়েছে, ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন করে অনাস্থা বৈঠকের নোটিস দিতে হবে। অর্থাৎ অনাস্থার উপরে ভোটাভুটি অবধারিত। কিন্তু তা আবার কিছুটা পিছিয়ে গেল।
সব্যসাচী দত্তকে নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিড়ম্বনায় তৃণমূল। মূলত মুকুল রায়ের সঙ্গে সব্যসাচীর ঘনিষ্ঠতা নিয়েই আপত্তি তৃণমূল নেতৃত্বের। আর সব্যসাচী বার বার দলের সেই আপত্তিকে অগ্রাহ্য করেছেন। মুকুল রায় তৃণমূল ছাড়ার পরেও একাধিক বার তাঁকে বাড়িতে আপ্যায়ন করেছেন বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। এর জেরে সব্যসাচীকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় আগেও শুরু করেছিল তৃণমূল। কিন্তু শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক সেরে সে বার ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা সব্যসাচীকে পাশে নিয়ে জানিয়েছিলেন যে, সব্যসাচী ভুল করেছেন এবং এমন ভুল তিনি ভবিষ্যতে আর করবেন না। সব্যসাচী নিজেও তেমনই জানিয়েছিলেন।
কিন্তু সম্প্রতি ফের সব্যসাচীর উপরে তৃণমূল নেতৃত্ব রুষ্ট হন বিদ্যুৎ ভবনে একটি বিক্ষোভের জেরে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বিধাননগরের মেয়র। দল যদি মনে করে যে তিনি শৃঙ্খলা ভাঙছেন, তা হলে দল ব্যবস্থা নিক— এমন মন্তব্যও সব্যসাচী করেন। তার পরেই তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তৃণমূল ভবনে বিধাননগরের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ফিরহাদ হাকিম। সেই বৈঠকে সব্যসাচীকে ডাকা হয়নি। মেয়র সব্যসাচীর বদলে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে পুরসভার কাজ সামলাতে বলা হয়।
তৃণমূল ভবনে যে দিন এই বৈঠক হয়, সে দিন রাতেই ফের মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক হয় সব্যসাচী দত্তর। বিধাননগরের একটি ক্লাবে তাঁরা দেখা করেন, একসঙ্গে নৈশভোজও সারেন। তার পরেই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার নির্দেশ দিয়ে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
৩৫ কাউন্সিলরের স্বাক্ষর সম্বলিত অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছিল চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কাছে। তবে সব্যসাচী দত্ত পদত্যাগের রাস্তায় তখনই হাঁটেননি। ভোটাভুটিতেই বোঝা যাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা কোন পক্ষে— চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়েছিলেন বিধাননগরের মেয়র। অনাস্থা প্রস্তাবের ভিত্তিতে যে নোটিস তাঁকে পাঠিয়েছিলেন পুর কমিশনার, তার বৈধতাকেও আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় নোটিস অবৈধ। কিন্তু তাতে সব্যসাচীর ভাগ্য রাতারাতি বদলে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা তৈরি হয়নি।
গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের দশম তলব এড়ালেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আরো পড়ুন
সোমবার কলকাতা গেলেও সিবিআইয়ের ডাকে নিজাম প্যালেসে যাননি অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল। আরো পড়ুন
টাকা তাঁর নয়। মঙ্গলবার এমনই দাবি করলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। আরো পড়ুন
রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল। একথা নিশ্চিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। আরো পড়ুন
প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের নথিপত্র। আরো পড়ুন
বৃহস্পতিবার তাঁর মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিকে নজর ছিল গোটা রাজ্যের। আরো পড়ুন
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতিতে আর্থিক তছরুপের তদন্তে নেমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বান্ধবীর বাড়ি থেকে তাড়া তাড়া টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। আরো পড়ুন